ছত্রপতি শিবাজী প্রভাবিত নারায়ণপেট সিল্ক শাড়ি
- Jana Ajana
- Aug 29, 2020
- 2 min read
স্ত্রী হোক বা পুরুষ শাড়ি মোটামুটি সবাই কেন । মহিলারা যেমন তাদের নিজের জন্য শাড়ি কেনে, পুরুষেরাও ঠিক তেমনি ভাবে তার মা , বোন, স্ত্রী ,ঠাকুমা দিদিমা, মামিমা, মাসিমা ইত্যাদি আত্মীয়স্বজনদের জন্য কখনো না কখনো শাড়ী কিনেই থাকে । ভারতীয় শাড়ি শৈলীর অনেকগুলি ধরন আছে যাদের মধ্যে বিখ্যাত হল- বেনারসী শাড়ি , ঢাকাই মসলিন, জামদানি, কলমকারি , নারায়ন পেট, বালুচুরি শাড়ি, কোটা দরিয়া শিল্ক / কোটা শাড়ি ইত্যাদি । অনেকেই এদের শিল্পশৈলী সম্পর্কে অনভিজ্ঞ তাদের জন্যই আজকের এই প্রতিবেদন নারায়ণ পেট সিল্ক শাড়ি ।


নারায়ণ পেট শাড়ি গুলির সাথে যুক্ত রয়েছে একটি স্বতন্ত্র শৈলীর উৎকৃষ্ট নিদর্শন । শাড়ি গুলির ওপরের অংশের সূচীকর্মের ( সুতোর কাজ সুতা দিয়ে হাতে করে সেলাই করা হয় ) সাথে একটি পৃষ্ঠতল যুক্ত নকশা রয়েছে এবং সীমানা বা আঁচল বা পল্লুতে মন্দিরের মতো জটিল জ্যামিতিক জাতিগত নকশা রয়েছে । নারায়ন পেট সিল্ক শাড়ির সীমানা এবং পল্লুতে ছোট জরির নকশা বিপরীতে ( উল্টো দিকে ) বর্ণিত থাকে ।
1630 সালে ঐতিহাসিক রেকর্ড গুলির মাধ্যমে জানা যায় মারাঠা রাজা ছত্রপতি শিবাজী 'নারায়ণপেট' অঞ্চল ভ্রমণ করেন সেখানে তিনি কিছুদিনের জন্য অস্থায়ী ভাবে

বসবাস করেন যখন তিনি তার যাত্রা অব্যাহত রেখেছিলেন তখন কয়েকটি তাঁতি বা বুনকর পেছনে রয়ে যায় ( শিবাজীর সাথে না গিয়ে নারায়ণপেট অঞ্চলে থেকে যায় ) আর এই সব তাঁতি রাই সেখান থেকে গিয়ে সিল্ক শাড়ি তৈরির তথা তাঁর নকশার ক্ষেত্রে একটি স্বতন্ত্র শৈলীর প্রচলন করে যা নারায়ণ পেট সিল্ক শাড়ি নামে পরিচিত হয় । এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে মারাঠা অঞ্চল থেকে নারায়ণ পেট পর্যন্ত স্থানান্তরিত বয়ণকারিতার সৌজন্যে নারায়ণ পেট সিল্ক শাড়ি গুলিতে প্রচুর মহারাষ্ট্রীয় প্রভাব দেখা যায়। পরবর্তীকালে "লোকপাল শাসনস্থানের" শাসনকালে নারায়ন পেট সিল্ক ও তুলা শাড়ি ব্যবহার নাটকীয় ভাবে বৃদ্ধি পায় ।
নারয়ণপেট শাড়ি উৎপাদনের জন্য সবজি রং ( vegetable Color, or colour ) ব্যবহার করা হয় । এটি একটি অসাধারণ প্রক্রিয়া যেখানে আটটি শাড়ি তৈরী করা হয় এক ঘরে । সুতরাং লম্বা কাঠের ৭ গজের ফ্যাব্রিকের পরিবর্তে , সিল্কের ৫৬ গজ , একক সময়ে তাঁতে মাউন্ড ( লাগানো) করা হয় ।

Degumming/অবনতি( নিচে কাপড় পেতে পরিষ্কার করে) , রঞ্জনবিদ্যা ( রং করে ) এবং তা শুকনোর পর তার প্রকৃত বয়ন শুরু হয় । তুলাশাড়ি /সুতির শাড়ির ক্ষেত্রে এটি সরাসরি সম্পন্ন করার জন্য একদিন সময় লাগে, আর একটি সিল্কের শাড়ি সম্পুর্ন হতে ৪-৫ দিন সময় লাগে । ২০১২ সালে নারায়ণপেট শাড়ি ভারতের জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেটর ( G.I ) দ্বারা সম্মানিত হয় । আজ শাড়ির বাজারে নারয়ণপেট শাড়ি খুবই বিখ্যাত হয়েছে । একটি নারায়ণ পেট সিল্ক শাড়ির দাম বর্তমানে এক হাজার টাকা থেকে ষোলো হাজার টাকা পর্যন্ত (১০০০ টাকা থেকে ১৬০০০ টাকা পর্যন্ত )।
ধন্যবাদ:

Tridibesh Chatterjee
আপনারাও যদি ভারতীয়, স্থাপত্য ,ভাস্কর্য ,শিল্পকলা, গান ,নাচ, ইতিহাস ,ভূপ্রকৃতি , পরিবেশ , অর্থনীতি সংস্কৃতি ও ভ্রমণ বিষয়ে নিজেদের লেখা পাঠাতে চান তাহলে আমাদের এই ঠিকানায় আপনার লেখা ও ছবি পাঠিয়ে দিন ।
ঠিকানা : janaajana46@gmail.com
Comments