Part 2 স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিভঙ্গি → নারী শিক্ষা
- Jana Ajana
- Aug 31, 2020
- 3 min read
স্বামী বিবেকানন্দ ভারতীয় যুব সমাজের কাছে 'শক্তির পরম স্রোত ' বা পাওয়ার হাউস এর মতো । শুধু ভারত কেন সারা বিশ্বের কাছে স্বামী বিবেকানন্দ হলেন শক্তির পরম স্রোতের মতো । সংকল্প শক্তি, বিচার শক্তি , আধ্যাত্মিক শক্তি এবং আত্মবিশ্বাসের শক্তির পরম স্রোত বলতে পারেন । ১২ ই জানুয়ারি ১৮৬৩ সালে মকর সংক্রান্তির দিন "নরেন্দ্রনাথ দত্ত" জন্মগ্রহণ করেন কলকাতায় । তার বাবার নাম ছিল বিশ্বনাথ দত্ত , যিনি কলকাতা হাইকোর্টের একজন আইনজীবী ছিলেন । যাই হোক স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী , শিকাগো ধর্ম সম্মেলনে বক্তব্য রাখা, শ্রী রামকৃষ্ণ - মা সারদার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন নির্মাণ ইত্যাদি বিষয় গুলি আমরা মোটামুটি সবাই পড়ে থাকি বা সবাই জানি । কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষা বা নারী শিক্ষার প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি কথা আমরা অনেক কম জানি। এর আগের প্রতিবেদনে আমরা স্বামীজীর নারী শিক্ষায় তার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করেছে । আজ এই দ্বিতীয় পর্বে আমরা আবারো স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিভঙ্গিতে নারী শিক্ষা আলোচনা করব ।

বর্তমান সমাজে স্বামীজীর নারী শিক্ষার তাৎপর্য : একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এই কথা উল্লেখ্য যে বর্তমান সমাজের অগ্রগতির সাথে সাথে নারী শিক্ষার অবস্থানে তেমন উৎকর্ষতা লাভ করে নি । ২০১১ সালের জন গননা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় মোট শিক্ষিতর হার ৭৪.০৪% সেখানে নারী শিক্ষার হার নয় শক্তি দশমিক ৬৫.৪৬ শতাংশ ও পুরুষ শিক্ষিতের হার ৮২.১৪ শতাংশ । গ্রামাঞ্চলের দিকে এখনো পর্যন্ত শিক্ষার আলো থেকে নারীরা দূরে অবস্থান করছে । তবে একথা উল্লেখ্য যে সময়ের অগ্রগতির সাথে সাথে নারীজাতিরও যথেষ্ট উন্নতি সাধন হচ্ছে । নারীরা এখন আর পর্দার অন্তরালে নেই দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা নিজেদের যুক্ত করে চলেছে । এক্ষেত্রে স্বামীজীর একটি কথা বলা যায় "৫০০ জন পুরুষ ৫০ বছরে ভারত জয় করলে , ৫০০ জন নারী তা ৫০ দিনে করবে।" শিক্ষা মনস্তত্ত্ববিদ রা মায়ের শিক্ষার ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করেছেন , অর্থাৎ মাতৃ শিক্ষায় হলো শিশুর প্রথম বিদ্যালয় শিক্ষা ।

তাই বর্তমান দিনেও স্বামীজীর নারী শিক্ষা সংক্রান্ত মতাদর্শ খুবই তাৎপর্যবাহী । বর্তমান দিনে নারীদের জীবনে শিক্ষার গুরুত্ব রয়েছে তা নিম্নরূপ -
শিক্ষা মানুষের সক্ষমতা, শক্তি ও সম্ভাবনাকে বুঝতে সাহায্য করে।
শিক্ষা নারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস আত্ম উপলব্ধি করে তুলতে সাহায্য করে।
একজন শিক্ষিত নারী প্রকৃত মা হয়ে তার সন্তানদের উপযুক্ত রূপে প্রতিপালন করে তাদের দেশের নাগরিক বানাতে সক্ষম হয় ।
শিক্ষায় একজন নারীকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে সক্ষম করে তুলতে পারে ।
শিক্ষায় নারীদেরকে 'বৈষম্যের' প্রতি প্রতিবাদের সুর তুলতে সাহায্য করে ।
উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে একজন নারী তার জীবনে তিন রকমের ভূমিকা

পালন করে থাকে । প্রথম পর্যায়ে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল 'মেয়ে' হিসেবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে একজন আদর্শ স্ত্রী হিসাবে ও তৃতীয় পর্যায়ে একজন আদর্শ মা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা । শিক্ষার মাধ্যমে এই তিন রকম ভূমিকাকে কিভাবে ভালো করে পালন করা যায় তা নারীরা শেখে , অর্থাৎ শিক্ষায় হলো নারীদের আদর্শ শিক্ষক ।
পরিশেষে বলা যায় স্বামী বিবেকানন্দের মতে যতক্ষণ না পর্যন্ত নারীরা সমাজে সুরক্ষিত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভারতীয় সমাজের উন্নতি সম্ভবপর নয় । আজ স্বামীজীর জন্মের শতবর্ষ অধিক পার করে স্বাধীনতার পরবর্তী কালে নারী জাতির উন্নতি কল্পে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণের রূপায়নের পড়ো নারী-পুরুষের সাক্ষরতার হার 35% বৈষম্য দেখা যাচ্ছে । অথচ স্বামীজীর দর্শন আদর্শ আজও মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত এই বৈষম্য দূর করে প্রত্যেকটি নারীকে উন্নতির শিখরে পৌঁছানোর জন্য তাদের নিজেদেরই সচেষ্ট হতে হবে । এ প্রসঙ্গে স্বামীজীর সেই বিখ্যাত উক্তিটি স্মরণ করে আজকের এই প্রতিবেদন শেষ করলাম ।
স্বামীজীর উক্তি -
Arise,Awake & Stop not still the Goal is reached


ধন্যবাদ:
নীলাক্ষী অধিকারী
nilakshiadhikari1995.na@gmail.com
ঠিকানা : janaajana46@gmail.com
Comments