top of page
Search

Part 2 আনাই-জামবদের (মহাদেব বেড়া) জৈন পুরাকীর্তি

  • Writer: Jana Ajana
    Jana Ajana
  • Aug 25, 2020
  • 3 min read


ভারতের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে জৈন স্থাপত্য ও ভাস্কর্য । আমাদের পুরুলিয়া জেলা ও ব্যতিক্রমী নয় । পুরুলিয়া জেলার আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছিল জৈন স্থাপত্য ভাস্কর্যের উৎকৃষ্টতম

উদাহরণ গুলি যাদের বেশিরভাগ অখ্যাত ও অযত্নে পড়ে রয়েছে । এই অখ্যাত জৈন পুরা ক্ষেত্র গুলির মধ্যে অন্যতম হলো আনাই জামবাদ বা মহাদেব বেড়া । আগের দিন এর প্রতিবেদনে আমরা মহাদেব বেড়া তিনটি তীর্থঙ্কর মূর্তির ভাস্কর্যের সম্পূর্ণ বিবরণ আলোচনা করছি , যদি আপনারা দেখতে চান তাহলে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন - https://janaajanahistories.wixsite.com/janaajanahistories/post/part-1-আন-ই-জ-মব-দ-র-মহ-দ-ব-ব-ড-জ-ন-প-র-ক-র-ত


এই প্রতিবেদনে আনাই-জামবাদ এর মোট ছয়টি জৈন মূর্তি, শেষ তিনটি মূর্তি নিয়ে আলোচনা করব । আগের প্রতিবেদনের বৃহৎ পার্শ্বনাথের মূর্তির পাশে বাঁদিকে রয়েছে আরেকটি পার্শ্বনাথের মূর্তি‌, যেটি

"পার্শ্বনাথ ও পঞ্চতীর্থঙ্কর :২৩ তম তীর্থঙ্কর হলেন ভগবান পার্শ্বনাথ

আকারে অনেকটাই ছোট । ২৩ তম তীর্থঙ্কর হলেন ভগবান পার্শ্বনাথ । মূর্তিটির নাম হল "পার্শ্বনাথ ও পঞ্চতীর্থঙ্কর " , উচ্চতায় ৬৮.৭সেন্টিমিটার এবং চওড়ায় ৩৪ সেন্টিমিটার । এখানে মূলনায়ক কায়োৎস্বর্গ মুদ্রায় পদ্মের উপর দাঁড়িয়ে আছেন এবং আগের মূর্তিটির মতোই এখানেও দেবের পেছনে মাথার উপর রয়েছে সাত ফণা বিশিষ্ট সাপ এবং তার উপর রয়েছে ত্রিস্তরীয় ছাত্র বা ছাতা। এই ছাত্র বাছাতার দুই পাশে রয়েছে বীণা বাদক যুগল । মাথার চুল কোঁকড়ানো এবং তার উপর রয়েছে একটি উসিনিস( চুলের ঝুটি )। পার্শ্বনাথের মূর্তির মাথা পেছনে দেখা যাচ্ছে শিরোসিচক্র ( দেবজ্যোতি ) । পার্শ্বনাথের মূর্তি চিহ্নিতকরণের সবচেয়ে সহজ উপায় হল যে এই দেবতার সঙ্গে সাপ থাকবেই অর্থাৎ এই তীর্থঙ্করের লাঞ্ছণ চিহ্ন হল সাপ বা সর্প । "মূল নায়ক" এর দুই পাশে খোদিত আছে মোট চারজন তীর্থঙ্করের মূর্তি প্রতিটি মূর্তির জন্য আলাদা আলাদা সিংহাসন খোদিত রয়েছে । এই খোদিত সিংহাসন এর মধ্যেই রয়েছে তীর্থঙ্করদের লাঞ্চিণ চিহ্ন যা দেখে তীর্থঙ্করদের চিহ্নিত করা । চার জন তীর্থঙ্করই কায়োৎসর্গ মুদ্রায় দাঁড়িয়ে আছেন । ডান দিকে রয়েছেন ১২ তম তীর্থঙ্কর বাসুপূজ্য ( লাঞ্ছণ চিহ্ন মহিষ) এবং ৬ তম তীর্থঙ্কর পদ্মপ্রভ ( লাঞ্চণ চিহ্ন পদ্মফুল ) । মূলনায়কের বাঁদিকে রয়েছেন ২২ তম তীর্থঙ্কর নেমিনাথ ( লাঞ্ছণ চিহ্ন শঙ্খ ) এবং ২৪ তম তীর্থঙ্কর মহাবীর ( লাঞ্ছণ চিহ্ন সিংহ ) ।

পার্শ্বনাথের মূর্তি দুই পাশে রয়েছে দুইজন চামরধারী যাদের মাথায় রয়েছে মুকুট এবং দেহের নিচের অংশে রয়েছে বস্ত্র । পার্শ্বনাথ ত্রিরথ সিংহাসনের পাশ থেকে নাগ যুগল বের হয়েছে । পুরুষ নাগ মূর্তিটি হাত জোড় অবস্থায় প্রার্থনা মুদ্রায় রয়েছে। এবং নাগিনী মূর্তিটির হাতে রয়েছে বাদ্যযন্ত্র । ত্রিরথ সিংহাসনের যেখানে নাগ যুগলের উৎপত্তি হয়েছে তার নিচেই দুই পাশে রয়েছে একটি করে সিংহ এবং সিংহাসনের একদম ডানদিকে রয়েছে ভগবানকে উৎসর্গ করার দ্রব্য এবং বাঁদিকে রয়েছে একটি প্রার্থনারত নারীমূর্তি । মূর্তিটি সম্পূর্ণ কালো রঙের এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ঘী ও তেলের আস্তরণ জমে রয়েছে । মূল মূর্তিটির অর্থাৎ পার্শ্বনাথের মূর্তিটির কানের লতি অনেক বড় এবং না ও চোখের অংশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে । মূর্তিটির সময়কাল আনুমানিক খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দী



এরপর যে মূর্তিটি চোখে পড়বে সেটি অত্যন্ত সাধারণ কারুকার্য বিহীন তথা সবচেয়ে ছোট। এই মূর্তিটি হল‌ ৮ ম তীর্থঙ্কর চন্দ্রপ্রভকায়োৎসর্গ মুদ্রায় তীর্থঙ্কর দাঁড়িয়ে আছেন ত্রিরথ সিংহাসনের উপর ।

৮ ম তীর্থঙ্কর চন্দ্রপ্রভ

সিংহাসনের ঠিক মাঝখানে রয়েছে অর্ধচন্দ্র , এটি হলো চন্দ্রপ্রভ লাঞ্ছণ চিহ্ন । দেবের দুই পাশে রয়েছে ২জন চামরধারী । এদের মাথায় রয়েছে মুকুট এবং দেহের নিম্নাংশ রয়েছে বস্ত্র দুটিই পুরুষ মূর্তি । চন্দ্রপ্রভা চুল কোঁকড়ানো এবং চুলে রয়েছে উসিনিস ( ঝুটি) , কানের লতি খুব লম্বা। মূর্তিটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল দেবের মাথায় একাধিক স্তর বিশিষ্ট (৪/৫ ) ছাত্র বা ছাতা রয়েছে । এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা যে মূর্তিগুলি দেখলাম তার বেশিরভাগই ত্রিস্তরীয় ছাত্র । ছাত্রের দুই পাশেই রয়েছে বীণা বাদক যুগল । এই মূর্তীটিও কালো রঙের এবং এতেও তেল ও ঘী এর ব্যবহার যথেষ্ট পরিমাণে হয়েছে । মূর্তিটি উচ্চতায় ৩৫ সেন্টিমিটার এবং চওড়াতে ১৮ সেন্টিমিটার । মূর্তিটি সম্ভবত অসম্পূর্ণ ।





এর পর নতুন আবিষ্কৃত মূর্তি এবং সর্বশেষ যে মূর্তিটি রয়েছে , সেই মূর্তিটি হল প্রথম তীর্থঙ্কর ঋষভনাথ বা আদিনাথ । আগের প্রতিবেদনে ঋষভনাথের যে মূর্তিটি পাওয়া গেছে , সেই মূর্তিটির

প্রথম তীর্থঙ্কর ঋষভনাথ বা আদিনাথ

মত । এখানেও দেব কায়োৎসর্গ মুদ্রায় পদ্মের উপর দণ্ডায়মান । ত্রিরথ সিংহাসনের একদম মাঝখানে রয়েছে দেবের লাঞ্ছণ চিহ্ন ষাঁড় এবং এর দুই পাশে রয়েছে সিংহ । দেবের দুই পাশে রয়েছে দুইজন চামর ধারী । মূল নায়ক বা প্রধান দেবতা বা ঋষভনাথের দুই পাশে রয়েছে চারজন তীর্থঙ্করের মূর্তি যারা কায়োৎসর্গ মুদ্রায় নিজ নিজ সিংহাসনে দণ্ডায়মান । আদিনাথ এর মাথায় রয়েছে জটা মুকুট এবং তার চুল কাঁধ পর্যন্ত নেমে এসেছে । মাথার পেছনে রয়েছে শিরোসিচক্র । মাথার একদম উপরে রয়েছে চার স্তরবিশিষ্ট ছাত্র/ছাতা এবং ছাত্রের দুই পাশে রয়েছে দুইজন বীণা বাদক যুগোল । মূর্তিটি সম্পূর্ণ কালো রঙের, উচ্চতায় ৬৮ সেন্টিমিটার এবং চড়াই ৩০ সেন্টিমিটার । মূর্তিটির আনুমানিক সময়কাল খ্রিস্টীয় নবম থেকে একাদশ শতাব্দীর পর্যন্ত ।




আনাই-জামবাদ বা মহাদেব বেড়ায় যদি ভবিষ্যৎ এ খননকার্য করা হয় তাহলে আরও মূর্তি এবং সম্পূর্ণ একটি মন্দির বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা খুব প্রবল । শেষ হলো আনাই-জামবাদ এর ভাস্কর্য গুলির সম্পূর্ণ বিবরণ ।

আগের প্রতিবেদনের বৃহৎ পার্শ্বনাথের মূর্তি








আপনারাও ভারতীয় সংস্কৃতি ইতিহাস ভ্রমণকাহিনী ইত্যাদির ওপর নিজের নিজের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের email address এ janaajana46@gmail.com




ধন্যবাদ

Tridibesh Chatterjee

 
 
 

Comments


tridibesh_edited.jpg

জানা-অজানা

ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভ্রমণ

Know your history

WEEKLY NEWSLETTER 

Thanks for submitting!

  • https://www.facebook.com/ChhauMaskandPuruliaTourGuide/?ref=pages_you_manage

© 2023 BY Tridebesh Chatterjee. Designed BY CAPTUREGRAPHICS.IN

bottom of page